বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান
-
বেক্সিমকো গ্রুপকে কি বাংলাদেশের সেরা প্রাইভেট কোম্পানি হিসাবে বিবেচনা করা যায়?
2024-03-24 View 783বেক্সিমকো গ্রুপকে বাংলাদেশের এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি বলা হয়। বলা হয় এই প্রতিষ্ঠান অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রগামী। আসলেই কি তাই? বেক্সিমকো গ্রুপকে বাংলাদেশের সেরা প্রাইভেট কোম্পানি হিসাবে বিবেচনা করা যায় কিনা, তা নির্ভর করে কোন কোন মানদণ্ড ও প্রেক্ষাপটের ওপর ভিত্তি করে বিবেচনাগুলো করা হচ্ছে। তবে নিশ্চিতভাবেই, বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রভাবশালী কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি। যদি টেক্সটাইল, সিরামিক এবং ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টর বিবেচনা করা হয়, তাহলে বেক্সিমকো গ্রুপকে সেরা বলতে হবে। মিলিত ভাবে এই তিন সেক্টরে বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি। এখানে বেক্সিমকো গ্রুপের সাফল্য আকাশচুম্বী। একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক আকার, বৈচিত্র্য আনবার ক্ষমতা, বাজারের উপর প্রভাব, এবং সম্প্রসারণে দক্ষতা বিবেচনা করলে বেক্সিমকো গ্রুপ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রগামী। স্টক মার্কেটে একটি কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এর অবদানকেও মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বেক্সিমকো গ্রুপ সেরাদের অন্যতম তবে এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি নয়। প্রভাব বিস্তারে বেক্সিমকো গ্রুপ অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রগামী। ১৯৮০ দশক থেকে কর্পোরেট দায়িত্ব এবং নৈতিক ব্যবসায়িক অনুশীলন বিষয়ে বেক্সিমকো গ্রুপ নজর দিয়েছে। দেশের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বেক্সিমকো গ্রুপের দেখান পথ অনুসরণ করেছে। সার্বিক ভাবে দেখলে, বেক্সিমকো গ্রুপকে 'সেরা' হিসেবে বিবেচনা করা হবে কিনা তা নির্ভর করবে দৃষ্টিভঙ্গির উপর। সব ক্ষেত্রে এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি না হলেও নিশ্চিতভাবে সব তালিকার শীর্ষে রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বেক্সিমকো গ্রুপ
বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে এ সম্ভব হয়েছে যে সব প্রতিষ্ঠানের জন্য, তার শীর্ষে রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। ১৯৭২ সালে দুই ভাই সালমান এফ রহমান এবং সোহেল এফ রহমান প্রতিষ্ঠা করেন এই কোম্পানি যেটা বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সফল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সালমান এফ রহমান এবং সোহেল এফ রহমানের নেতৃত্বে বেক্সিমকো গ্রুপ টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকস সহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করেছে এবং সফল হয়েছে। বিভিন্ন সেক্টরে উদীয়মান সুযোগগুলিকে কাজে লাগিয়ে শীর্ষ অবস্থান নিশ্চিত করেছে। বেক্সিমকো প্রমাণ করেছে যে বাজারের গতিশীলতার পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিলে সাফল্য আসে। বেক্সিমকো গ্রুপের সাফল্যের আরেকটি ভিত্তি হল উদ্ভাবন। গ্রুপটি ধারাবাহিকভাবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং আধুনিক ব্যবসায়িক অনুশীলনকে গ্রহণ করেছে। ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় বাজারে, উচ্চ-মানের জেনেরিক ওষুধ এবং সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান করে আসছে এবং অগ্রগামী ভুমিকা পালন করছে। । বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অগ্রগতিতেও বেক্সিমকো গ্রুপ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। গুনগত মানের প্রতি বেক্সিমকো গ্রুপের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি সবসময় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। গ্রাহকের বিশ্বাস নিশ্চিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে, গ্রুপের কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আনুগত্য এটিকে বিভিন্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সক্ষম করেছে। বেক্সিমকো বর্তমানে ৫০ টিরও বেশি দেশে পণ্য রপ্তানি করেছে। বেক্সিমকোর কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলির সাথে সহযোগিতা প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং জ্ঞান বিনিময়কে সহজতর করেছে। পাশাপাশি ক্রমাগত উন্নতি এবং বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করেছে। সালমান এফ রহমান এবং সোহেল এফ রহমানের নেতৃত্ব বেক্সিমকোর সাফল্যের যাত্রায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তাদের দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং নৈতিক ব্যবসায়িক অনুশীলনের প্রতি প্রতিশ্রুতি প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
স্কয়ার গ্রুপ
মূলত স্কয়ার বলতে কোন জ্যামিতিক আকার বা আকৃতি বোঝায়। কিন্তু, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে স্কয়ার একটি সফলতার গল্পের নাম। স্কয়ার গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান এবং বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। রাতারাতিই এই কোম্পানি এসব সফলতা অর্জন করেনি। এই সফলতার পিছনে ছিল অনেক পরিশ্রম, চেষ্টা ও দৃঢ় উদ্যম। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব দিকের ছোট একটি জায়গা, আতাইকুলা গ্রামে একটি ঔষধ প্রস্তুতকরণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্কয়ার কোম্পানি তাদের যাত্রা শুরু করে। তাদের সফলতার পিছনে মূলমন্ত্র হল মাণ সম্পন্ন পণ্য প্রস্তুতকরণ। এবং এটিই স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিকে এক অন্য উচ্চতায় দাড় করিয়েছে। প্রায় ৩০ বছর ধরে কোম্পানিটি বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালকোম্পানি গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। বাংলাদেশের শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যালকোম্পানির খেতাব পাওয়ার পাশাপাশি এর আরও অনেক কীর্তি রয়েছে। ১৯৮৫ সাল থেকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাললিমিটেড (এসপিএল) দেশের শীর্ষ জাতীয় এবং বহুজাতিক সংস্থা হয়ে আসছে। ১৯৫৮ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯১ সালে এটি জনসাধারণের সেবায় নিয়োজিত একটি কোম্পানি হয়ে যায়। সেই সময়কাল থেকেই কোম্পানিটি সফলতার দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকে। যার প্রমাণস্বরূপ একটি পরিসংখ্যান হচ্ছে, ২০১০ সালে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির বিক্রয়মূল্য ছিল প্রায় ১৬৩.৭১ মার্কিনডলার এবং এর অধীনে কর্মচারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২৮,০০০ লোক। এই ধরনের সফলতা কখনই সম্ভব হত না, যদি না সেই কোম্পানিতে দক্ষ এবং যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানকারী নেতা বা পথপ্রদর্শক না থাকতো। এরকম নেতৃত্বের অধীনে থেকেই কোম্পানিটি এতো মানুষের কাছে পৌছাতে পেরেছে। স্কয়ার গ্রুপ তাদের বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির মাধ্যমে এদেশের এবং বিদেশেরও অনেক মানুষের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলেছে। তাদের ওষুধ প্রস্তুতির মাধ্যমে তাঁরা দেশের অসুস্থ মানুষের কাছে পৌঁছেছে, এছাড়াও তাদের বস্ত্রশিল্প, মসলা জাতীয় পণ্য, দেশ বিদেশে যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তৈরির বিভিন্ন উপাদান প্রস্তুতকরনের মাধ্যমে তাঁরা তাদের ব্যবসা ও সেবা অনেক প্রসারিত করেছে। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এরকম গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অসংখ্য সংখ্যক পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ স্কয়ার কোম্পানি মার্কেনটাইল ব্যাংকের পক্ষ থেকে ‘দেশের শিল্প ও বাণিজ্যিকখাতে বিশেষ অবদান স্বীকৃতি ২০০৩’ পুরস্কার