জাতীয়
-
সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার মধ্যে অত্যন্ত সফল আলোচনা
2024-07-27 View 346চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছেন যে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় তিনি অব্যাহত সমর্থন দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকালে দুই নেতা ‘খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অত্যন্ত সফল আলোচনা’ করেছেন। খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার মধ্যে অত্যন্ত সফল আলোচনা হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীন অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ,রেয়াতযোগ্য ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ দিয়ে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করবে। দুই দেশের কারিগরি কমিটি একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে যে, বাংলাদেশের উন্নয়নে চার ধরনের আর্থিক সহায়তা কীভাবে দেওয়া হবে। চীনের কারিগরি কমিটি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে বলেও জানান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আরও চীনা বিনিয়োগ চাইলে শি বলেন, তারা বাংলাদেশে ক্রমাগত আরও বিনিয়োগ করতে চান এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর সাথে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত কয়েক দশকে চীনের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, "উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।" প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো কিছু আইকনিক কাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। শেখ হাসিনা দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং চীনের প্রতি ব্যবধান কমানোর আহ্বান জানান। জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা বাংলাদেশ থেকে আমসহ আরও পণ্য আমদানি করবে। শি বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় চীন ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে।
ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব
একটি দেশের ব্যবসায়ীরা শুধু মুনাফার জন্য ব্যবসা করবেন তেমনটি ভাববার দিন পার হয়ে গেছে। কথাটি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ব্যবসা শুধু মুনাফার জন্য করলে তার ফল দেশ এবং সমাজের উপর এসে পড়ে না। তাই আধুনিক ব্যবসায়ীরা এখন তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ছক এমনভাবে কাটেন যাতে ব্যবসায় মুনাফা অর্জন হয় এবং পাশাপাশি সমাজ এবং দেশ ব্যবসা থেকে কিছু অর্জন করে। সমাজ রাষ্ট্র এবং দেশ যখন ব্যবসা থেকে কিছু অর্জন করবে তখনই ব্যবসা সার্থক হবে। একটি দেশের বেসরকারি খাত সেই দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখে। বেসরকারি খাত যত উন্নতি করবে, দেশের অর্থনীতি তত উন্নতি করবে। বাংলাদেশের মতন একটি প্রগতিশীল দেশের জন্য বেসরকারি খাতের উন্নতি খুবই প্রয়োজনীয়। সাম্প্রতিক সূচক দেখলে এটা লক্ষ্য করা যায় যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মোট পাঁচ ভাগের ৪ ভাগই আসে প্রাইভেট সেক্টর থেকে। এটা সম্ভব হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যার মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপ, স্কোয়ার গ্রুপ এবং ইসলাম গ্রুপ অন্যতম, তাদের একান্ত প্রচেষ্টায়। স্বাধীনতার পর থেকে এইসব প্রতিষ্ঠান মুনাফার পাশাপাশি সমাজ রাষ্ট্র এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যার ফলে সমাজ তথা দেশের মানুষ উপকৃত হচ্ছে। দেশের আধুনিক ব্যবসায়ীদের এই ব্যাপারটি অনুধাবন করা প্রয়োজন যে সঠিকভাবে ও সৎভাবে ব্যবসা করলে নিজেদের যেমন মুনাফা হবে তেমনি সমাজ উপকৃত হবে। যেমনভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক সোহেল এফ রহমান এবং সালমান এফ রহমান মুনাফার পাশাপাশি সমাজ এবং দেশের জন্য অবদান রেখেছেন তেমনি বর্তমান যুগের ব্যবসায়ীদের উচিত হবে প্রতিটি ব্যবসা পরিচালনার সময় সমাজ রাষ্ট্র এবং দেশের কথা মাথায় রাখা।
পরিবেশ বান্ধব কারখানার তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ
বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুততার সাথে তাদের কলকারখানাগুলো পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তুলছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশ যুগান্তকারী পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সফল রেখেছে এবং প্রথম থেকেই কলকারখানাগুলো পরিবেশবান্ধব করার প্রয়াস নিয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে গড়ে উঠছে, তাদের অনেকেই শুরু থেকেই পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা তৈরি করতে মনোযোগ দিয়েছে। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে যে বর্তমানে বাংলাদেশে ৫৬ টি পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা রয়েছে যা বাংলাদেশকে পরিবেশ বান্ধব কারখানার লিস্টে শীর্ষস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। যতদিন যাবে, এর সংখ্যা তত বাড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। পাকিস্তান আছে দ্বিতীয় স্থানে যেখানে পরিবেশ বান্ধব কারখানার সংখ্যা মাত্র নয়টি। চার ক্যাটেগরিতে ভাগ করে সবুজ কারখানার সনদ দেয়া হয়ে থাকে। এই সনদ দেয় ইউনাইটেড স্টেট গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল। সর্বমোট ১১০ পয়েন্টের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে এই সনদ দেয়া হয়। সর্বশ্রেষ্ঠ ক্যাটাগরির নাম প্ল্যাটিনাম যার জন্য ৮০ পয়েন্ট পেতে হয়। এর পর আছে গোল্ড ক্যাটাগরি যার অন্তর্ভুক্ত হতে হলে ৬০ থেকে ৬৯ পয়েন্টের মধ্যে থাকতে হয়। একটি কারখানায় সূর্যের আলোর কি পরিমান ব্যবহার হয়, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবার জন্য কি পরিমান সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়, বৃষ্টির পানি কিভাবে সংরক্ষণ করে তা পুনরায় ব্যবহার করা হয়, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ঠিকমতো আছে কিনা, এসব যাচাই-বাছাই করে সনদ দেয়া হয়। কারখানাকে পরিবেশ বান্ধব করা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিনিয়োগ। এর কারণ পরিবেশ বান্ধব কারখানায় পণ্য তৈরি হওয়া মানে বিশ্ববাজারে এক ধাপ এগিয়ে থাকা। পরিবেশবান্ধব কারখানাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে এগিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন পথে
অর্থনীতি বলতে সহজ ভাষায় আমরা বুঝি পণ্যের উৎপাদন, বন্টন ও ব্যাবহারের মধ্যকার একটি বিজ্ঞান। কিন্তু একটি দেশের অর্থনীতি নির্ভর করে সেই দেশের মোট অর্থনীতির জাতীয় আয়, কর্মসংস্থান, মুদ্রানীতি প্রভৃতি বিষয়ের উপর। যা পরিবর্তনশীল। ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বেশ সমাদৃত বিশ্ববাসীর কাছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বইছে সুবাতাস। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফ এর মতে, ২০২৫ সাল থেকে অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আইএমএফ বলছে, আগামী বছর থেকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি বাড়তে শুরু করবে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করবে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে বাংলাদেশ। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বার্ষিক বৈঠকের জন্য তৈরী ২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের এপ্রিল সংস্করণে বাংলাদেশের অর্থনীতির এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ইরান, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে – যা অত্যন্ত আশার সংবাদ। এদিকে অর্থনীতির ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে, এ বছরের শুরু থেকে কমেছে আমদানি ব্যয়। বাড়ছে রপ্তানি তাতে সামগ্রিকভাবে কমে গেছে বাণিজ্য ঘাটতি। প্রবাসী আয় বেড়েছে যা নজর কাড়ছে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা এই ধারাকে বেশ ইতিবাচক ভাবে দেখছেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সবচেয়ে শঙ্কাজনক অবস্থায়, তবে আশার বাণী হলো, পতন থেকে রক্ষা পেয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত ডিসেম্বরের তথ্য তে দেখা গেছে, বর্তমান হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল ১৯২ কোটি মার্কিন ডলার। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা্টি রাখছে প্রবাসী আয়। রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয় গত কয়েক মাস ধরে তাঁর ধারা অব্যাহত রাখায় চলতি হিসাবে আগে উদ্বৃত্ত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য ঘাটলে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর রফতানি বেশি হয়েছে ১২.০৪ শতাংশ। একই মাসে বাংলাদেশে যখন রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি আয় আসে, তখনও প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ছিল বলে জানা যায়। সর্ববোপরি, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে
বেক্সিমকো গ্রুপকে কি বাংলাদেশের সেরা প্রাইভেট কোম্পানি হিসাবে বিবেচনা করা যায়?
বেক্সিমকো গ্রুপকে বাংলাদেশের এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি বলা হয়। বলা হয় এই প্রতিষ্ঠান অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রগামী। আসলেই কি তাই? বেক্সিমকো গ্রুপকে বাংলাদেশের সেরা প্রাইভেট কোম্পানি হিসাবে বিবেচনা করা যায় কিনা, তা নির্ভর করে কোন কোন মানদণ্ড ও প্রেক্ষাপটের ওপর ভিত্তি করে বিবেচনাগুলো করা হচ্ছে। তবে নিশ্চিতভাবেই, বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রভাবশালী কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি। যদি টেক্সটাইল, সিরামিক এবং ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টর বিবেচনা করা হয়, তাহলে বেক্সিমকো গ্রুপকে সেরা বলতে হবে। মিলিত ভাবে এই তিন সেক্টরে বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি। এখানে বেক্সিমকো গ্রুপের সাফল্য আকাশচুম্বী। একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক আকার, বৈচিত্র্য আনবার ক্ষমতা, বাজারের উপর প্রভাব, এবং সম্প্রসারণে দক্ষতা বিবেচনা করলে বেক্সিমকো গ্রুপ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রগামী। স্টক মার্কেটে একটি কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এর অবদানকেও মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বেক্সিমকো গ্রুপ সেরাদের অন্যতম তবে এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি নয়। প্রভাব বিস্তারে বেক্সিমকো গ্রুপ অন্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রগামী। ১৯৮০ দশক থেকে কর্পোরেট দায়িত্ব এবং নৈতিক ব্যবসায়িক অনুশীলন বিষয়ে বেক্সিমকো গ্রুপ নজর দিয়েছে। দেশের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বেক্সিমকো গ্রুপের দেখান পথ অনুসরণ করেছে। সার্বিক ভাবে দেখলে, বেক্সিমকো গ্রুপকে 'সেরা' হিসেবে বিবেচনা করা হবে কিনা তা নির্ভর করবে দৃষ্টিভঙ্গির উপর। সব ক্ষেত্রে এক নম্বর প্রাইভেট কোম্পানি না হলেও নিশ্চিতভাবে সব তালিকার শীর্ষে রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ।
সালমান এফ রহমানঃ বেক্সিমকো গ্রুপের বাইরে তার সাফল্য কি?
সালমান এফ রহমানের জন্ম এক রাজনৈতিক পরিবারে। তার পিতা ফজলুর রহমান ভারতের ব্রিটিশ শাসনামলে বাংলার রাজস্ব মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর ফজলুর রহমান পাকিস্তানের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ দশকের মাঝামাঝি তিনি পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন। স্বাধীনতার পর তিনি তার বড়ভাই আহমেদ সোহেল রহমানের সাথে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো গ্রুপ) প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে তারা ইউরোপে সামুদ্রিক খাবার এবং চূর্ণ হাড় রপ্তানি শুরু করেন এবং বিনিময় মুদ্রা দিয়ে দেশের জন্য ওষুধ আমদানি শুরু করেন। ব্যাবসা বাড়তে থাকলে তারা টেক্সটাইল,সিরামিকস, ট্রেডিং, সামুদ্রিক খাদ্য, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট, নির্মাণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পাওয়ার ও মিডিয়া সেক্টরে প্রবেশ করেন। তাদের বেশীরভাগ প্রোজেক্ট সফল হয়। একসময় তারা লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের বিকল্প বিনিয়োগ বাজারে বেক্সিমকো ফার্মাকে তালিকাভুক্ত করেন। বেক্সিমকো ফার্মা প্রথম বাংলাদেশি কোম্পানি হিসেবে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে এখন ৭০,০০০ মানুষ কাজ করে। সালমান এফ রহমান শুধু বেক্সিমকো গ্রুপের প্রবৃদ্ধি ও সম্প্রসারণই নিশ্চিত করেই ক্ষান্ত হননি। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক খাতের গতিশীলতাও পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। এবং পেরেছেন। প্রকৃত থিঙ্কট্যাঙ্ক বলতে যা বুঝায় তিনি তাই। অতীতে তিনি সার্ক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এইদুই অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও তিনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অব ঢাকা (এমসিসিআই), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে সালমান এফ রহমান তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আন্দোলন নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালে তিনি ঢাকা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেই বছরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বেসরকারি খাতের শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব পাবার পর থেকে দেশের
সালমান এফ রহমান- মননশীলতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ
সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন। তিনি এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা পাকিস্তানী শাসন আমলে একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। অতীতে তিনি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং আই এফ আই সি ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও আরও পূর্বে তিনি সাইনপুকুর হোল্ডিং লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে লক্ষণীয় একটি বিষয় হল এসকল কোম্পানির প্রত্যেকটিই নিজেদের জায়গা থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে। ঢাকা-১ আসন থেকে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়ে তিনি দেশের কল্যাণে কাজ করছেন। এর সাথেসাথে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবারও তিনি একই আসন থেকে নির্বাচন করবেন। বেক্সিমকো গ্রুপকে আজকের এই অবস্থানে দাড় করাতে সালমান এফ রহমানকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। তাঁর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় বেক্সিমকো গ্রুপ আজ ব্যবসার বিভিন্ন শাখায় সফলভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বেক্সিমকো গ্রুপ এখন সিরামিক, ওষুধ উৎপাদন, আবাসন প্রকল্প এবং বিনোদন জগতে কাজ করছে। এছাড়াও বস্ত্রশিল্প, বিভিন্ন অর্থসংস্থান, নির্মাণ, জ্বালানী, পাট শিল্প, বিমান এবং সেরামিক শিল্পেও কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক খাতে উন্নয়নেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন, সার্ক চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাদেশ শিল্পসমিতি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সামাজিক উন্নয়নেও সালমান এফ রহমান কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন দারিদ্র বিমোচন কর্মকাণ্ডের সাথে তিনি সক্রিয় ভাবে জরিত আছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন মানবাধিকার রক্ষা সংস্থার সদস্য ছিলেন। দেশের ক্রীড়া উন্নয়নেও তাঁর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ক্রীড়া সংস্থা ‘আবাহনী ক্রীড়াচক্রের’ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তাঁর এই সকল গুণাবলী তাকে বাংলাদেশের সকল উদ্যোক্তাদের মাঝে আলাদা মর্যাদায় রেখেছে।
বাংলাদেশ পরবর্তী এশিয়ান টাইগার
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চীন এবং ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে গেছে। বিদেশী বিনিয়োগের জন্য এটি এখন অন্যতম গন্তব্য। দেশটি খাদ্য উৎপাদেনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এইসব কিছু সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের সঠিক নীতিমালা বাস্তবায়নের কারণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মতে কোন কিছু অর্জন করা সহজ নয় কিন্তু তিনি সেটা সম্ভব করে দেখিয়েছেন। তিনি দেশের কল্যাণের জন্য সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একটি শক্তিশালি অর্থনীতি তৈরী করার স্বপ্ন নিয়ে ২০০৯ সালে তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন। তার সে স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নিয়েছে। সালমান এফ রহমানের মতে, বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা, অব্যাহত অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বেসরকারী খাতের সম্প্রসারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করেছে এবং এটি সম্ভব হয়েছিল কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরোপ্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এখন গ্রামগুলিতেও সবধরেনের আধুনিক সুবিধা রয়েছে, শহরে উন্নত অবকাঠামো রয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ এখন উন্নতজীবনযাত্রার বিষয়টি অনুভব করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরপরই বিদ্যুতের ঘাটতি হ্রাস করার লক্ষ্যে বেসরকারী কোম্পানিগুলোকে স্বল্প পরিসরের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের নির্দেশ দেন। বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করতে এই সিদ্ধান্তটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল। তিনি বেসরকারী খাতকে ব্যাংকিং, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সম্প্রচার খাতে বেশি বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছিলেন যা পূর্বেশুধু সরকারী খাতের জন্য সংরক্ষিত ছিল। শুধু তা-ই নয়, শেখ হাসিনা ফ্যাক্টরটি সব বাংলাদেশিকে আত্মবিশ্বাসের অনুভূতি দিয়েছিল। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ভিক্ষের জন্য পরিচিত ছিল। শেখ হাসিনা ফ্যাক্টর বাংলাদেশকে একটি Growing Tiger-এ রূপান্তরিত করেছে। বাংলাদেশ এখন ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে চলেছে। কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশ সে বছর স্বাধীনতার প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন করবে। সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের একজনবিশিষ্ট ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিচিত। তার বক্তব্যে তিনি বলেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ণের দর্শনে পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক গুণাবলী রয়েছে। সালমান এফ রহমান প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো ঢাকা ১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
মাশরাফি-বিন-মুর্তজা
মাত্র ১৭ বছর বয়সে আবির্ভাবেই চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মরা উইকেটেও গতিতে ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলছেন। আর ব্যাট হাতে নামলেই বোলারদের তুলে তুলে মেরেছেন। ২০০০ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন কারো আবির্ভাব সাড়া ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনাই। সাড়া দেশে ছড়িয়ে পড়ল নামটা, কৌশিক। পুরো নাম মাশরাফি-বিন-মুর্তজা। তিনি ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ হিসেবে পরিচিত। ম্যাকগ্রার বা চামিন্ডা ভাসের মতো শত শত উইকেট নেই তার। পাকিস্তানের শোয়েব আখতারের মতো গতিদানবও ছিলেন না তিনি । পরিসংখ্যান, স্পিড গানের হিসাব দিয়ে তাকে চেনা যাবে না বা তুলনাও করা যাবে না। তিনি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার, সেরা ক্রিকেটার ও সেরা দলনায়ক। তিনিই দেশের প্রথম গতিতারকা। তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। মাশরাফি-বিন-মুর্তজা তরুন ক্রিকেটারদের সবচেয়ে বড় প্রেরণার নাম। বাংলাদেশে যেকোন চলচিত্র বা নাটক বা অন্য কোন তারকার চেয়ে তিনি সবচেয় বড় তারকা। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে, তরুন, রাজনীতিবিদ পযর্ন্ত আছে তার ভক্তের তালিকায়। দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা নড়াইলে ১৯৮৩ সালের ৫-ই অক্টোবর মাশরাফি পিতা গোলাম মুর্তজা ও মাতা হামিদা মুর্তজার ঘরে জন্ম গ্রহন করেন। ছোটবেলাতে বাঁধাধরা পড়াশোনার পরিবর্তে খেলাধুলার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ ছিল। আর মাঝে মধ্যে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটাতেন। ২০০৩/০৪ শিক্ষা বর্ষে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। তরুণ বয়সে ক্রিকেটের প্রতি তার আগ্রহ জন্মায় । ব্যাটিংয়ে পারদর্শি ছিলেন যদিও এখন বোলার হিসেবেই তিনি খ্যাত। নিজের গুণেই হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতীক। বোলার মাশরাফি হিসেবে যতটা না জনপ্রিয় তার চেয়ে বেশী জনপ্রিয় তার অসাধারন নেতৃত্বগুণের জন্য। দেশকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে ম্যাচ জেতানো অধিনায়ক এখন তিনি। একটা সময় অনেক আন্তর্জাতিক মানের স্পিনার থাকলেও বাংলাদেশে কোন ভাল ফাস্ট বোলার ছিল না। মাশরাফি সেই শূন্যস্থান পূরণ করেন। গতিময় আর আক্রমণাত্মক বোলিং দিয়ে মাশরাফি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাবেক ফাস্ট বোলার অ্যান্ডি রবার্টসের নজর কাড়েন। ২০০১ সালে কোন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট না খেলেই টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয়। সেই অভিষেকেই ১০৬ রানে ৪টি