বেক্সিমকো গ্রুপ জিরো কুপন বন্ডের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে
দেশের প্রাইভেট সেক্টরের সর্ববৃহৎ কোম্পানি বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে অনুমোদন পেয়েছে অরূপান্তরযোগ্য জিরো কুপন বন্ড প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ১,৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবার।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এক বিশেষ সভায় বেক্সিমকো গ্রুপের জিরো কুপন বন্ড সংক্রান্ত প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। বন্ডের প্রতিটি লটের দাম নির্ধারিত হয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা। এই বন্ড শেয়ারবাজারে লেনদেন করা হবে না।
১৯৭০ দশকের শুরুর দিকে গঠিত বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রাইভেট সেক্টর কোম্পানি হিসেবে পরিচিত। প্রতিষ্ঠানটি যুগের পর যুগ বাংলাদেশের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যে অবদান রেখে আসছে। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৭০ হাজারের উপর মানুষ কাজ করে। গত ১০ বছরে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এই পরিক্রমায় গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি আবাসন প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠানটি এই জিরো কুপন বন্ড বাজারে ছাড়বে। এই বন্ড থেকে সংগ্রহকৃত বাকি অর্থ প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করবে।
বেক্সিমকো গ্রুপ আবাসন প্রকল্পটি শ্রীপুর টাউনশিপ কোম্পানির সাথে যৌথ উদ্যোগে গড়ে তুলবে। প্রকল্পটির নাম মায়ানগর। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে ১০০ একর জায়গা নিয়ে এই মায়ানগর আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে যেখানে থাকবে ১৮ হাজার এপার্টমেন্ট। প্রকল্পটির মালিকানার ৭৫ শতাংশ বেক্সিমকো গ্রুপের এবং ২৫ শতাংশ শ্রীপুর টাউনশিপের।
মার্চ মাসের ১০ তারিখ বেক্সিমকোর পরিচালনা পর্ষদ এক সভায় জিরো কুপন বন্ড ইস্যুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। এই বন্ড নন-কনভার্টেবল ও রিডিমেবল। বন্ডটির বার্ষিক ডিসকাউন্ট হার ১৫ শতাংশ। বন্ডটির এরেঞ্জার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে আইএফআইসি ইনভেসমেন্ট লিমিটেড এবং ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করবে সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্স।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঠিক পর পর, আহমেদ সোহেল এফ রহমান এবং সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে শুধুমাত্র আমদানি-রপ্তানিতে জড়িত থাকলেও কালের পরিক্রমায় বেক্সিমকো গ্রুপ ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল, সিরামিকস, এলপিজি, খাদ্য ও পানীয়, স্যাটেলাইট, মিডিয়া, আবাসন, আর্থিক পরিষেবা এবং নবায়নযোগ্য-শক্তি খাতে বিনিয়োগ করে এবং সাফল্য পায়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। পাশাপাশি তিনি একজন সাংসদ সদস্য।
বেক্সিমকো লিমিটেড ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মতন তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির রিজার্ভের ৭৩৮৫ কোটি টাকার উপরে রয়েছে।
ধারণা করা হয় বেক্সিমকো গ্রুপের এই জিরো কুপন বন্ড বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ধারা উন্মোচন করবে যার ফলশ্রুতিতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ভিন্ন এক গতি পাবে। অর্থনিতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা।