বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন পথে
অর্থনীতি বলতে সহজ ভাষায় আমরা বুঝি পণ্যের উৎপাদন, বন্টন ও ব্যাবহারের মধ্যকার একটি বিজ্ঞান। কিন্তু একটি দেশের অর্থনীতি নির্ভর করে সেই দেশের মোট অর্থনীতির জাতীয় আয়, কর্মসংস্থান, মুদ্রানীতি প্রভৃতি বিষয়ের উপর। যা পরিবর্তনশীল।
ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বেশ সমাদৃত বিশ্ববাসীর কাছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বইছে সুবাতাস। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফ এর মতে, ২০২৫ সাল থেকে অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। আইএমএফ বলছে, আগামী বছর থেকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি বাড়তে শুরু করবে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করবে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বার্ষিক বৈঠকের জন্য তৈরী ২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের এপ্রিল সংস্করণে বাংলাদেশের অর্থনীতির এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ইরান, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে – যা অত্যন্ত আশার সংবাদ।
এদিকে অর্থনীতির ধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে, এ বছরের শুরু থেকে কমেছে আমদানি ব্যয়। বাড়ছে রপ্তানি তাতে সামগ্রিকভাবে কমে গেছে বাণিজ্য ঘাটতি। প্রবাসী আয় বেড়েছে যা নজর কাড়ছে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা এই ধারাকে বেশ ইতিবাচক ভাবে দেখছেন।
ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বেশ সমাদৃত বিশ্ববাসীর কাছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সবচেয়ে শঙ্কাজনক অবস্থায়, তবে আশার বাণী হলো, পতন থেকে রক্ষা পেয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত ডিসেম্বরের তথ্য তে দেখা গেছে, বর্তমান হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল ১৯২ কোটি মার্কিন ডলার। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা্টি রাখছে প্রবাসী আয়। রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয় গত কয়েক মাস ধরে তাঁর ধারা অব্যাহত রাখায় চলতি হিসাবে আগে উদ্বৃত্ত।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য ঘাটলে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর রফতানি বেশি হয়েছে ১২.০৪ শতাংশ। একই মাসে বাংলাদেশে যখন রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি আয় আসে, তখনও প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ছিল বলে জানা যায়।
সর্ববোপরি, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে ৩৯ তম অবস্থানে রয়েছে। হতাশার জায়গা গুলো কাটিয়ে দেশে বেড়েছে কর্মসংস্থান। দেশীয় উৎপাদন হার আগের বছরগুলোর তুলনায় লক্ষ্যণীয় হারে বেড়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের ৭ম দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দূর্নীতি ঠেকিয়ে ও নিজ জায়গা থেকে তা দমন করে একযোগে কাজ করলে আরও উন্নতি সম্ভব।